







আমরা এক কথায় বিনোদন বলতে বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়াকে বুঝি। বর্তমান এই আধুনিক যুগের শিখরে দাড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের কাছে বিনোদনের এক আলাদাই মানে হয়ে দাড়িয়েছে। শুধু বিনোদন না মানুষজন তার প্রতিভা এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে সকলের সামনে তুলে ধরে রাতারাতি স্টার হতে পারে।




এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই আমরা রানু মন্ডল, বিপাশা দাস ও চাঁদমনি হেমব্রমের মতো সঙ্গীত শিল্পীদের আমাদের মাঝে পেয়েছি। এছাড়া রানু মন্ডল এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জনপ্রিয় হবার পর তার বর্তমানে একটি বায়োপিকও তৈরি হচ্ছে।




এছাড়াও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ যেমন – বন্যা, ভারী বৃষ্টিপাত এই সকল আমরা এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেই নিমিষের মধ্যে জেনে যেতে পারি। এছাড়া বিভিন্ন জনপ্রিয় তারকাদের দৈনন্দিন জীবযাপনের সুখ দুঃখের মুহূর্তও আমরা এই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেখতে পারি।




সোশ্যাল মিডিয়ার অবদান আমাদের জীবনে অনস্বীকার্য। সাধারণদের ভিড়ে কিছু মানুষ তাদের অসাধারণ কর্মের মাধ্যমে মহত্বের পরিচয় দেন। এমনই এক মহান মানুষকে চিনেছে সম্পূর্ণ দেশ। কমলালেবু বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন তিনি, উপার্জন বলতে মাত্র ১৫০ টাকা প্রতিদিন।




যেখানে বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে ১৫০ টাকাতে কিছুই হয় না সেখানে রোজগারের সামান্য টাকা সঞ্চয় করে একটি সম্পূর্ণ স্কুল তৈরী করে ফেলেছেন তিনি। এই মহৎ কাজের জন্য এবার পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হলেন হারেকালা হাজব্বা।




৬৪ বছর বয়সী হাজব্বা থাকেন ম্যাঙ্গালুরুর নিউপাদাপুত গ্রামে। কমলা লেবু বিক্রি করেই তিনি জীবিকা নির্বাহ করেন। সারাদিনে মেরেকেটে ১৫০ টাকা মত রোজগার করেন তিনি কমলালেবু বিক্রি করে। আর সেই টাকা থেকেই সঞ্চয় করে করে স্কুল তৈরী করে ফেলে সারা দেশে নজির গড়েছেন তিনি।




সূত্রের খবর দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হয় এই স্কুলে। এই স্কুলের মোট ছাত্র ছাত্রী সংখ্যা ১৭৫ জন। নিজের শৈশব কালে স্কুলে যাননি হাজব্বা। তবে গ্রামের বাকিরা শিক্ষার আলো থেকে দূরে থাকুক সেটাও মেনে নিতে পারেনি সে। তাই গ্রামের ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা যাতে শিক্ষার আলো দেখতে পায় তাই জন্যই নিজের কষ্টের টাকা দিয়েই গড়ে তুলেছেন এই স্কুল।




এক একর জমির ওপর ২০০০ সালে এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন হাজব্বা। স্কুল তৈরী করে গ্রামের ছোটদের অক্ষর চিনিয়েছেন তিনি। তাই তিনি স্থানীয় লোকেদের কাছে ‘অক্ষরা সান্তা’ নামে খ্যাত। প্রসঙ্গত স্কুল তৈরী করেই থমকে যাননি হাজব্বা।
Harekala Hajabba, a fruit-vendor from Karnataka's Mangaluru, who built a school in his village from his earnings, was conferred with the Padma Shri award today pic.twitter.com/t0lOdiOQpd
— ANI (@ANI) November 8, 2021
তার ইচ্ছে রয়েছে স্কুলের পর একটি কলেজ তৈরী করার। যাতে গ্রামের ছোটরা স্কুল থেকে বেরিয়ে কলেজের থেকেও শিক্ষা পায় আর সমাজকে আরও উন্নত করে তুলতে সাহায্য করে। এবার নিজের এই মহৎ কাজের জন্যই পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হলেন হারেকালা হাজব্বা। কিভাবে এই যাত্রার শুরু হয়েছিল জিজ্ঞাসা করে হাজব্বা জানিয়েছেন,
‘একবার কমলা লেবু বিক্রি করার সময় আমায় বিদেশী দম্পতি এসে দাম জিজ্ঞাসা করে। কিন্তু তাঁরা কি বলছে তার কিছুই বুঝতে পারিনি। কারণ আমি টুলু আর বিহারি ভাষা ছাড়া কিছুই জানতাম না। তাই তখনই সিদ্ধান্ত নিই গ্রামের বাকি বাচ্চাদের এই সমস্যার সম্মুখীন হতে দেব না। এরপর ধীরে ধীরে টাকা জমিয়ে এই স্কুল তৈরী করি’।